লিভার ক্যান্সারের ঔষধ - লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ
পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়লে লিভার ক্যান্সারের ঔষধ ও লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্পর্কে ভালো একটা ধারণা পাবেন। এছাড়াও আরো জানতে যেসব বিষয়ে আলোচনা করা হবে তা হলো লিভার ক্যান্সারের চিকিৎসা ও লিভার ক্যান্সারের লক্ষণ এবং লিভার ক্যান্সার নির্ণয় কিভাবে করে সে সম্পর্কে। এছাড়াও লিভার ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ সম্পর্কেও আজকে আলোচনা করা হবে। তো চলুন লিভার ক্যান্সারের ঔষধ ও লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ সহ অন্যান্য বিষয় সম্পর্কিত আজকের পোস্টটি শুরু করি।
পোস্ট সূচিপত্রঃ
- লিভার ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ
- লিভার ক্যান্সার নির্ণয়
- লিভার ক্যান্সারের চিকিৎসা
- লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ
- লিভার ক্যান্সার - শেষকথা
লিভার ক্যান্সারের লক্ষণ - লিভার ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ
লিভার ক্যান্সার একটি জটিল সমস্যা। বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার এর মধ্যে লিভার ক্যান্সার একটি হলো লিভার ক্যান্সার। লিভারে যদি ক্যান্সার এর টিস্যু তৈরি হয় তখন সে অবস্থা কে লিভার ক্যান্সার বলা হয়ে থাকে। সাধারণত যাদের মধ্যে এই রোগটি ধরা পড়ে তারদের মধ্যে অধিকাংশ লোকেরাই সঠিক সময়ে বুঝতে পারে না। যার মূল কারণ আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে লিভার ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা নেই। এই পাঠে আমরা লিভার ক্যান্সারের লক্ষণ কিংবা লিভার ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ সম্পর্কে আলোচনা করবো। লিভার ক্যান্সারের লক্ষণ বা লিভার ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ সমূহ হলোঃ
- লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীরা পেটের ডান পাচে উপরের দিকে কিংবা বুকের নিচে ঠিক মাঝখান বরাবর ব্যথা অনুভব করে। অনেক সময় এ ব্যথা বেশি হয়ে থাকে আবার অনেক সময় এই ব্যথা কমও হয়ে থাকে। তবে এটি সম্পূর্ণ রোগীর ওপর নির্ভর করে।
- লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীরা সহজে দূর্বল হয়ে যায়। এরা অতি বেচি পরিশ্রম করতে পারে না।
- এদের ঘন ঘন পেট ফাপে যায়।
- লিভার ক্যান্সার এর আক্রান্ত ব্যক্তিদের ওজন সাধারণত হ্রাস পায়।
- লিভার ক্যান্সারের রোগীদের হালকা হালকা জ্বর বা জ্বর জ্বর ভাব হয়ে থাকে।
- খাওয়া দাওয়ার প্রতি অরুচি চলে আসে।
- মাত্রা অতিরিক্ত গ্যাস কিংবা কসা কসা পায়খানা হয়ে থাকে।
- প্রায়সময়ে বমি বমি ভাব বা বমি হয়ে থাকে।
উক্ত লক্ষণ গুলো কোনে ব্যক্তির মধ্যে দেখা দিলে বুঝতে হবে সেগুলো লিভার ক্যান্সারের লক্ষণ। সাধারণত উক্ত লক্ষণ গুলোই হলো লিভার ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ। এছাড়াও লিভার ক্যান্সার নির্ণয় ও লিভার ক্যান্সারের ঔষধ সম্পর্কে জানতে পরবর্তী অংশ গুলো পড়ে নিন।
আরো পড়ুনঃ টিউমার ভালো করার ৯টি উপায়
লিভার ক্যান্সার নির্ণয়
আমাদের দেশে লিভার ক্যান্সার নির্ণয় এর জন্য অনেক পন্থা রয়েছে। না ভাবে বিভিন্ন প্রযুক্তির মাধ্যমে লিভার ক্যান্সার নির্ণয় করা হয়ে থাকে। সাধারণত বাংলাদেশে যেসব পদ্ধতি অবলম্বন করে লিভার ক্যান্সার সনাক্ত করা হয় তা নিম্নে বর্ণা করা হলোঃ
- লিভার ক্যান্সার সনাক্ত করণের জন্য বাংলাদেশে যেটি অন্যতম সেটি হলো আলট্রাসাউন্ড। আলট্রাসাউন্ড এর ব্যবহার অনেক সহজলভ্য বলে আমাদের দেশে লিভার ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য এটির ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। এর মাধ্যমে লিভার এর আকার ও টিউমার এর সংখ্যা জানা যায়।
- চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে অন্যতম কয়েকটি মেশিন রয়েছে যেগুলো হলো সিটি স্ক্যান ও এমআরআই ও এনজিওগ্রাম। এ মেশিন গুলোর ব্যবহারের মাধ্যমে লিভার ক্যান্সার সনাক্ত করা যায়।
- লিভার ক্যান্সার সনাক্তকরণের আরেকটি মাধ্যম হলো বায়োপসি। যাকে ইংরেজিতে Image guidence বলা হয়। এটির মাধ্যমে লিভার এর কোষ পরীক্ষা করে সনাক্ত করা যায়।
উক্ত নির্ণয় ক্ষেত্র গুলো আমাদের দেশে লিভার ক্যান্সার সনাক্তকরণের জন্য বহুল জনপ্রিয়। এসব পদ্ধতি ও মেশিন এর সহায়তায় লিভার ক্যান্সার করা হচ্ছে যুগে যুগে। নিশ্চয়ই লিভার ক্যান্সার কিভাবে নির্ণয় করা হয় সে সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। এছাড়াও লিভার ক্যান্সারের ঔষধ ও লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্পর্কে জানতে সম্পূর্ণ পোস্টের সাথে থাকুন।
লিভার ক্যান্সারের ঔষধ - লিভার ক্যান্সারের চিকিৎসা
বর্তমানে লিভার ক্যান্সার ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। লিভার ক্যান্সার এর আক্রান্ত রোগীরা অনেকে এই বিষয়ে চিন্তিত থাকেন যে লিভার ক্যান্সারের ঔষধ বা লিভার ক্যান্সারের চিকিৎসা কি তা সম্পর্কে। আমাদের দেশের অধিকাংশ আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে লিভার ক্যান্সারের ঔষধ ও লিভার ক্যান্সারে চিকিৎসা সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা নেই বললেই চলে। তো যারা লিভার ক্যান্সারের ঔষধ কি সে সম্পর্কে জানেন তারা এই পাঠটি ভালো ভাবে পড়ুন। এই পাঠে লিভার ক্যান্সারের ঔষধ বা চিকিৎসা সম্পর্কে পূর্নাঙ্গ আলোচনা করবো। চলুন দেখে নিই লিভার ক্যান্সারের ঔষধ বা লিভার ক্যান্সারের চিকিৎসা গুলো।
আরো পড়ুনঃ পাতলা চুল ঘন করার উপায় - চুল পড়া বন্ধ করার উপায়
- অ্যালকোহল ইনজেকশনঃ এই ইনজেকশন এর মাধ্যমে টিউমারে আল্ট্রাসাউন্ড এর মাধ্যমে সুচ ঢুকিয়ে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা হয় অ্যালকোহল এর মাধ্যমে। এ সময়ে রোগীকে অচেতন বা অজ্ঞান অবস্থায় রাখা হয়। যাতে রোগী ব্যথা অনুভব না করে।
- RFA-আরএফএঃ এর পূর্ণ রুপ হলো রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি অ্যাভলেশন। এর মাধ্যমে টিইমার কোষ ধ্বংস করা হয়। যেখানে রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করা হয়।
- ক্রায়োথেরাপিঃ এটি হলো টিউমারের কোষ গুলো হিমায়িত হয়ে টিউমারের বিস্তার বন্ধ করে। একটি পাতলা ধাতব প্রোবের সাহায্যে করা হয় যা ক্যান্সার এর বৃদ্ধিতে ঢোকানো হয়। এর ফলে একটি ঠান্ডা গ্যাস বের হয় যা ক্যান্সার কোষগুলিকে ধ্বংস করে।
- সার্জারীঃ এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লিভারের যেখানে ক্যান্সার রয়েছে তা অপসারণ করা হয়। এ সময়ে রোগীর মধ্যে ডায়রিয়া, দূর্বলতা বা ব্যথা হতে পারে কিছু দিনের জন্য।
উপরের যেকোনো প্রক্রিয়ায় আপনারা লিভার ক্যান্সারের চিকিৎসা করতে পারেন। তাছাড়া ডাক্তাররা কেমোথেরাপির জন্য doxorubicin ও cisplatin নামক দুটি ঔষধ এর কথা বলেন যেগুলো ভালো ফলাফল দেয়। তবে অনেক রোগীকে বাঁচিয়ে রাখতে ডাক্তারা সোরাফিনিব, লেনভাটিনিভ এবং রিগোরাফেনিব ও নিডোলুমের মতো ঔষধ দিয়ে থাকে। ডাক্তার এর পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ খেলে এ রোগ অপসারণ হয়ে যাবে ইন শা আল্লাহ। আশা করি লিভার ক্যান্সারের চিকিৎসা ও লিভার ক্যান্সারের ঔষধ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এছাড়াও লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ কিভাবে করতে হয় সেটি জানতে পরবর্তী পাঠটি পড়ুন।
লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ
বিশ্বে লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু এর মূল কারণ হলো লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্পর্কে অবগত না হওয়া। তাই এই প্রবণতা গুলো কমাতে হলে সর্বপ্রথম লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্পর্কে জানতে হবে। একটু সচেতন হলেই কিন্তু লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই আমাদের কে লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে হলে সবাই কে এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে ও গুরুত্ব দিতে হবে। চলুন দেখে নিই লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ কিভাবে করবো সেসব বিষয় সম্পর্কে।
- সর্বপ্রথম গণসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। মানুষ কে এ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়ে জানিয়ে রাখতে হবে যাতে এ ক্যান্সার এর হার কমানো যায়।
- নবজাতকদের হেপাটাইটিস ‘বি’ ভ্যাকসিনেশন ও শিশুদের, ইয়ং অ্যাডাল্ট ও রিস্ক গ্রুপকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিনেশনের আওতায় আনতে হবে। যাতে এর আক্রান্ত হতে বাঁচতে পারে।
- এ রোগের স্বল্প মূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। তবে যাদের আর্থিক অবস্থা খারাপ তাদের জন্য বিশেষ দিক বিবেচনা করতে হবে।
- মদ্যপান ও ধূমপান এর সংখ্যা কমিয়ে আনতে হবে।
- অতিরিক্ত হরমোন গ্রহণ ও জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি গ্রহণ পরিহার করতে হবে, ইত্যাদি।
উক্ত পন্থা গুলো গ্রহণ করলে লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্ভব। তবে এ বিষয়ে সরকার ও জনগণ যৌথ ভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলেই লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্ভব। তা না হলে এর প্রবণতা কখনোই হ্রাস করা যাবে না।
লিভার ক্যান্সার - শেষকথা
যেহেতু লিভার ক্যান্সার একটি জটিল সমস্যা তাই এ বিষয়ে আমাদের অধিক সচেতন থাকতে হবে এবং প্রয়োজনে মাইকিং ও সন্মেলন এর মাধ্যমে এর জ্ঞান ছড়াতে হবে। তাছাড়া একজন সচেতন ব্যক্তি হিসেবে লিভার ক্যান্সারের লক্ষণ ও লিভার ক্যান্সারের ঔষধ এবং লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্পর্কিত জ্ঞান রাখা আবশ্যক। এসব বিষয়ে জানতে এই পোস্ট ভালো ভাবে পড়লে সব বুঝতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ ছোট শিশুর জ্বর হলে করণীয় কি
আশা করি আজকের পোস্ট টি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। পোস্ট টি পড়ে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না। প্রতিদিন এমন ভালো ভালো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন৷ এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। 18801
কৃষ্ণ কম্পিউটারস’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url