জমি কেনার সময় যেসব বিষয়ে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে
আপনি কি জমি কিনতে চাচ্ছেন বা ভবিষ্যতে জমি কেনার কোনো প্ল্যান আছে ! তাহলে জমি কেনার জন্য আপনাকে কিছু বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। না হলে জমি কেনার পর দেখতে পারেন আপনার ক্রয়কৃত জমির মালিক অন্য একজন। তাই জমি কেনার সময় আপনার করণীয় কি হবে সেটা না জানলে জমি কেনা বৃথা যেতে পারে। কাজেই এখন জেনে নিন জমি কেনার আগে, কেনার সময় এবং কেনার পর আপনার করণীয় কি।
জমি কেনার আগে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে।
জমি কেনার আগে করণীয় ঃ
১, জমি বিক্রেতার নামে রেজিষ্ট্রিকৃত দলিল আছে কিনা অথবা বৈধ স্বত্ব আছে কি না, দখলি স্বত্ব আছে কিনা।
২. হাল সন পর্যন্ত খাজনার রশিদ আছে কিনা।
৩. দলিলে উল্লেখিত পরিমান জমি তার দখলে আছে কিনা।
৪. জমিটি সর্ম্পূর্ন বা আংশিক বিক্রি করা হয়েছে কিনা।
৫. জমিটির অন্য কোনো ওয়ারিশ আছে কিনা।
৬. জমির দলিল টা জাল কিনা।
৭. মালিকের নামে জমিটি খারিজ আছে কিনা।
৮. দলিল উল্লেখিত দাগ নম্বর নকশার সাথে মিল আছে কিনা এবং রেকর্ডের সঙ্গে খতিয়ানের মিল আছে কিনা।
৯. বিক্রেতা ক্রয় সূত্রে নাকি উত্তরাধিকার সূত্রে জমিটির মালিক হয়েছেন ।
১০. জমিটি বর্গা বা বন্ধক দেওয়া আছে কিনা।
১১. জমিটি সহশরিকগণ কিনতে চায় কিনা।
১২. উকিল নোটিশ করা।
১৩. সরেজমিন খোঁজ নেওয়া ইত্যাদি।
১৪. বড় ধরনের প্লটে জমি বিক্রি করলে বিক্রিত জমি কোনো অংশে চৌহদ্দি উল্লেখ পূর্বক বিক্রিত জমি দখল চিহ্নিত করতে হবে।
১৫. বিক্রিত জমিতে কোনো সরকারি স্বার্থ জড়িত আছে কিনা যাচাই করতে হবে। যেমন- খাস, অর্পিত, পরিত্যক্ত কোর্ট অফ ওয়ার্ড, ২৫ বিঘা সিলিং বহির্ভুত, ওয়াকফ, দেবোত্তর অধিগ্রহণকৃত, কিনা ব্যাংক কর্তৃক ঋণ লওয়া আছে কিনা, বন্ধক দেওয়া আছে কিনা, সার্টিফিকেট মামলা, দেওয়ানী মামলা আছে কিনা ইত্যাদি বিষয় খুব ভালোভাবে যাচাই করতে হবে।
১৬. বিক্রিত জমিতে যাতায়াতের কোনো সরকারি-বেসরকারি রাস্তা আছে কিনা যাচাই করতে হবে।
১৭. বিক্রিত জমি বিক্রির জন্য অন্য কাউকে আমমোক্তার বা এ্যাটর্নী নিয়োগ করা আছে কিনা যাচাই করতে হবে।
১৮. বিক্রিত জমি প্রতিবেশিদের সাথে বিরোধ আছে কিনা যাচাই করতে হবে।
১৯. বিক্রিত জমি বিক্রেতা ইতিপেূর্বে অন্য কাহারো নিকট বিক্রি করেছেন কিনা যাচাই করতে হবে।
২০. বিক্রিত দাগের ভূমি সংশ্লিষ্ট মৌজা ম্যাপের সাথে সরেজমিনে সঠিক আছে কিনা যাচাই করতে হবে।
২১. বিক্রেতা ওয়ারিশ সূত্রে জমির মালিক হইলে রেজিষ্ট্রিকৃত আপোষ বন্টননামা দলিল আছে কিনা যাচাই করতে হবে।
২২. পিতার ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত ভূমি ক্রয়ের ক্ষেত্রে বিক্রিত জমিতে অন্য ওয়ারিশ গণ প্রাপ্ত কিনা তা যাচাই করে দেখতে হবে।
২৩. প্রয়োজনে বিক্রেতার প্রাপ্ত হোল্ডিং এ তার জমি ঠিক আছে কিনা তা ইউনিয়ন ভূমি অফিস বা তওশিল অফিসে গিয়ে খোজ নিতে হবে।
জমি কেনার সময় করণীয়
১. জমির দলিলের স্ট্যাম্প ক্রেতার নামে খরিদ করা ও রশিদ যত্ন সহকারে রাখা।
২. জমি রেজিষ্ট্রির সময় ক্রেতার ও বিক্রেতার উপস্থিত থাকা ও স্বাক্ষর/টিপসহি দেওয়া।
৩. নিজ নামে দলিল সম্পাদন ও রেজিষ্ট্রি করা।
৪. দলিল রেজিষ্ট্রির রশিদ সংগ্রহ করা ও যত্নসহকারে তা সংরক্ষন করা।
৫. ক্রেতার বিক্রেতার পাসপোর্ট সাইজের ছবি জমা দেওয়া।
৬. বিক্রেতার ক্রমানুসারে ১৯৭২ সালের রেকর্ড নামার পর থেকে ২৫ বছরের মালিকানার ইতিহাস।
৭. জমির চৌহদ্দি।
৮. বিক্রেতার নামে নামজরিপ কপি বা প্রস্তাবিত খতিয়ান এবং আর.এস খতিয়ান/পর্চা উপস্থাপন।
জমি কেনার পর করণীয়
১. রেজিষ্ট্রিকৃত জমি দখল করা।
২. নিজ নামে খারিজ/ই-নামজারি রা।
৩. নিজ নামে www.ldtax.gov.bd এই ওয়েবসাইটের নাগরিক কর্ণার থেকে নিজ জাতীয় পরিচয় পত্র ও মোবাইল নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে এবং খারিজ খতিয়ান টি তওশিল অফিসে নিয়ে গিয়ে হোল্ডিং খোলার পর অনলাইনে সমন্নই করে হাল খাজনা দিতে হবে।
৪. রশিদ জমা দিয়ে সাব রেজিষ্ট্রি অফিস থেকে মূল দলিল সংগ্রহ করতে হবে।
৬. জমির সকল কাগজপত্র যত্ন সহকারে সংরক্ষণ করা।
আজ এই পর্যন্তই.....প্রিয় পাঠক.... এরকম আরো নতুন আপডেট তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ।
কৃষ্ণ কম্পিউটারস’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url