গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতা-শীতে কেন গাজর খাবেন
নমষ্কার/আদাব। আজকের পোষ্টে আপনাদের সাথে গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতা-শীতে কেন গাজর খাবেন এই সম্পর্কে আলোচনা করতে চলেছি। এই আর্টিকেলে গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতা , গাজর খেলে কি ত্বক ফর্সা হয়,গাজর খাওয়ার নিয়ম , গাজর মুখে মাখলে কি হয় বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি প্রতিটা পয়েন্ট বিস্তারিত ভাবে জানতে চান তাহলে অবশ্যই আর্টিকেলটি খুব মনোযোগ সহকারে পড়ুন প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন। তাহলে আপনি অনায়াসে আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। সালাডেই খান বা হালুয়ায়। গাজর যেমন সুস্বাদু, তেমনই পুষ্টিকর। গাজর খেলে স্বাস্থ্য যেমন ভাল থাকে, তেমনই চুলও উজ্জ্বল হয়। আবার গাজরের মাস্ক, গাজর তেল মাখলেও সমাধান করা যায় চুলের যাবতীয় সমস্যার।
গাজর বেশিরবাগ ক্ষেত্রে আমরা শীতকালে দেখে থাকি। আর এর কারন হলো গাজর সাধারনত শীতকালীন সবজি/ফল। গাজরে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ‘এ’ আছে। গাজর খাওয়া স্বাস্থের পক্ষে অনেকটা উপকারী। তো চলুন আর দেরি না করে গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতা-শীতে কেন গাজর খাবেন এর বিস্তারিত নিয়ে শুরু করি। আর হ্যাঁ, পোষ্টটি অবশ্যই মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতা
এখনকার সময়ে ছোট থেকে বড় সবাই অনেক বেশি অসুস্থতায় ভুগছেন। তাই তারা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছে যে তাদের শরীর কিভাবে সুস্থ থাকবে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিভাবে বৃদ্ধি পাবে। তাই আপনাকে প্রতিনিয়ত এমন কিছু শাকসবজি খেতে হবে, যে শাকসবজি খেলে আপনার শরীর সুস্থ থাকবে। সকল সবজির পাশাপাশি গাজর কেও স্বাস্থ্যের জন্য একটি ভালো সবজি হিসেবে মনে করা.হয়।
কারণ গাজরের রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ যেমনঃ এসিড, কপার, ভিটামিন এ, ভিটামিন কে, ভিটামিন সি,প্যান্টোথেনিক ও ম্যাঙ্গানিজ আমাদের শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। তাছাড়াও গাজলে রয়েছে খনিজ, ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্যারোটিন। তাই আমি আজ আপনাদের সাথে গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানাবো। গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাইলে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
গাজরের উপকারিতা জেনে নিনঃ
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতেঃ গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন সমস্যা থেকে বা রোগ বালাই থেকে মুক্তি দেয়। গাজরে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি থাকার কারণে এতে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
বাচ্চাদের ব্রেন বৃদ্ধি করতেঃ প্রতিদিন খাবার তালিকায় যদি বাচ্চাদের কিছু গাজর খাওয়াতে পারেন এটি আপনাদের বাচ্চার ব্রেন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। গাজরে থাকা ভিটামিন এবং পুষ্টিগুণ বাচ্চাকে সুস্থ রাখতে এবং ব্রেন বৃদ্ধিতে অনেক সাহায্য করে। তাই নিয়মিত খাবার তালিকায় বাচ্চাদের কিছু পরিমান গাজর দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
গর্ব অবস্থায়ঃ গর্ব অবস্থায় প্রতিদিন ফল হিসেবে একটি করে গাজর খেলে বাচ্চা এবং মায়ের জন্য ভীষণ উপকার হবে। কারণ গাজরে ক্যালরি ও ভিটামিন এবং ক্যারোটিন থাকার ফলে বাচ্চার স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং গায়ের সুন্দর করতে সাহায্য করবে। তার পাশাপাশি মায়ের চেহারার মধ্যেও সৌন্দর্য দেখা দিবে। কিন্তু অতিরিক্ত মাত্রায় গাজর খাবেন না কোন কিছুই অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়। এতে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
দাঁতের জন্য গাজরের উপকারিতাঃ নিয়মিত কাজল খাওয়ার ফলে আপনাদের দাঁত অনেক শক্তিশালী এবং মজবুত থাকবে। আপনি প্রতিদিন একটি করে গাজর চিবিয়ে খেলে এটি আপনার দাঁতের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করবে। গাজরের থাকা ভিটামিন এ এবং ফাইটিং কেরাটিন থাকার কারণে আমাদের দাঁতের সূক্ষ্ম এনামেলকে মজবুত করতে সাহায্য করে ।
চোখের জন্য গাজরের উপকারিতাঃ আমাদের এখনকার সময় ছোট থেকে বড় সবাই চোখের সমস্যায় ভুগছেন। কিন্তু আপনারা যদি কিছু খাবার নিয়ম অনুযায়ী খান তাহলে এ সকল সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ যা আপনার দৃষ্টিশক্তিকে বাড়াতে এবং ভালো রাখতে সাহায্য করে। তাই আমাদের প্রতিদিন কিছু গাজর খাওয়া প্রয়োজন কমপক্ষে একটা করে।
হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করেঃ আপনারা যদি প্রতিদিন কিছু গাজর খান তাহলে আপনাদের হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করবে। কারণ গাজর আপনাদের পেট পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এতে বাথরুম ঠিকমতো হয় হজমে সমস্যা হয় না।
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাঃ যাদের অতিরিক্ত পায়খানা কষা বা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা রয়েছে তারা প্রতিদিন নিয়ম করে এক গ্লাস গাজরের জুস খাবেন এতে আপনাদের কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা এবং পাইলসের সমস্যা থেকেও মুক্তি পাবেন।
হার্ট যে শক্তিশালী করতেঃ যাদের হার্টের সমস্যা রয়েছে তারা প্রতিদিন এক থেকে দুই টা করে গাজর অথবা এক কাপ গাজরের জুস বা রস করে খাবেন। এতে আপনাদের হার্টের দুর্বলতা কেটে যাবে এবং হার্ট শক্তিশালী হবে।
রক্ত পরিষ্কারঃ গাজরে থাকা আইরন আমাদের শরীরের রক্তের ক্ষয় পূরণ করতে খুব তাড়াতাড়ি কাজ করে। এছাড়া প্রতিদিন দুই কাপ করে গাজরের রস খেলে আপনাদের রক্ত ও বিশুদ্ধ বা পরিষ্কার হবে।
হাড় মজবুত করতেঃ ভিটামিন সি এবং ক্যালসিয়াম থাকার কারণে হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে। আর যাদের শরীরে ভিটামিন ও ক্যালসিয়াম এর অভাব রয়েছে তারা নিয়মিত গাজর খান কারণ গাজর প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।
চুলের উপকারিতাঃ গাজরে থাকা ভিটামিন আপনাদের চুলের গোড়ার লক গুলোকে আরো মজবুত এবং শক্তিশালী করতে সাহায্য করে এবং চুল অনেক ঘন ও চকচকে করে তোলে। তাই আপনাদের নিয়মিত দুই থেকে তিনটা অথবা এক কাপ গাজর খাওয়া প্রয়োজন।
ত্বকের উজ্জ্বলতায় গাজরের উপকারিতাঃ নিয়মিত গাজর খান তাহলে আপনাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে। নিয়মিত গাজর খেলে আপনাদের ত্বক ও গাজরের মত সুন্দর হবে।
গাজরের গুণ:
গাজরের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, কে, সি, বি৬, বি১, বি২, ফাইবার, পটাশিয়াম, ফসফরাস রয়েছে। যা স্বাস্থ্য, চুল ও ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতে ও বয়স ধরে রাখতেও কার্যকরী গাজর।
কী কী কাজ করে গাজর:
১. চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে গাজর।
২. গাজর লাগালে চুলে সিল্কি, চকচকে ভাব আসে।
৩. রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে ঔজ্জ্বল্য বাড়ায় গাজর।
৪. চুলের গোড়া শক্ত করে গাজর।
৫. চুল ভেঙে যাওয়া ও পড়ে যাওয়া রুখতে সাহায্য করে গাজর।
৬. দূষণ, রুক্ষ আবহাওয়া থেকও চুলকে রক্ষা করে গাজর।
যেভাবে গাজর ব্যবহার করবেন:
শ্যাম্পু করার আগে-গাজর ছোট ছোট টুকরোয় কেটে নিন। এর সঙ্গে অলিভ অয়েল, নারকেল তেল, এসেনশিয়াল অয়েল ও মধু মিশিয়ে নিন।এই মিশ্রণ দু’তিন মিনিট গরম করুন। আঁচ থেকে নামিয়ে দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। চুলের গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত এই মিশ্রণ ভালভাবে লাগিয়ে ২০-২৫ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন। চুল বাড়বে, সিল্কিও হবে। সপ্তাহে একদিন এটা করতেই পারেন।
গাজর মাস্ক:
একটা গাজর ও একটা কলা নিন। খোসা ছাড়িয়ে ছোট ছোট টুকরোয় কেটে নিন। এর সঙ্গে অলিভ অয়েল মিশিয়ে ব্লেন্ডারে ভাল করে বেটে নিয়ে দই মিশিয়ে নিন। এই মাস্ক চুলে লাগিয়ে আধ ঘণ্টা রেখে হালকা শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই মাস্ক লাগালে চুলের গোড়া ভাঙবে না, চুলের বৃদ্ধি ভাল হবে, সিল্কি হবে।
গাজর তেল:
বাড়িতেই বানাতে পারেন গাজর তেল। গাজর ভাল করে কুরিয়ে নিন। কোরানো গাজর একটা জারে অলিভ অয়েল, নারকেল তেল বা তিলের তেল মিশিয়ে রেখে দিন এক সপ্তাহ। কমলা রঙ ধরলে বুঝবেন গাজর তেল ব্যবহারের জন্য তৈরি। সপ্তাহে এক দিন শ্যাম্পু করার আগে এই তেল মাথায় মাসাজ করুন।
যদি বাড়িতে পরিশ্রম করতে না চান তবে ক্যারট সিড অয়েল কিনতে পাওয়া যায়। নারকেল তেলের সঙ্গে এই তেল দু’তিন ফোঁটা মিশিয়ে নিন। মাথায় মালিশ করে এক ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন।
গাজরের অপকারিতা জেনে নিনঃ
যে কোন খাবার অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয় তাই অতিরিক্ত পরিমাণে গাজর খেলে ও উপকারের বদলে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কেউ যদি অনেক পরিমাণে গাজর গ্রহণ করে তার ফলে চোখের রং আস্তে আস্তে হলুদ হয়ে যেতে পারে। বাচ্চাদের অতিরিক্ত পরিমাণে গাজর খাওয়াবেন না এতে বাচ্চাদের দাঁতের ক্ষয় হতে পারে। গাজোরে অতিরিক্ত পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন থাকার ফলে অন্ত্র ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তারা অতিরিক্ত পরিমাণে গাজর খাবে না এতে সুগারের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। অতিরিক্ত গাজর খাওয়ার ফলে পেট ব্যথা বমি বমি ভাব গ্যাসটিকের সমস্যা হতে পারে। অতিরিক্ত গরম করলে আপনারা গাজর খুব বেশি খাবেন না এতে উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে আবার অনেক সময় ঘুম কমে যায়।
গাজর খাওয়ার নিয়ম
গাজর শীতকালের সবজি হলেও এখন সব সময় পাওয়া যায়। আগেকার সময়ে গাজর শীতকাল ছাড়া দেখায় মিলতো না। আর গাজরে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ থাকায় মানুষ এখন গাজর বেশি খায়। গা ধরে থাকা প্রচুর পরিমাণে খনিজ এবং ভিটামিন ও আরও অনেক উপাদান রয়েছে এই গাজরের মধ্যে। গাজর আমরা বিভিন্ন উপায়ে খেতে পারি আজ আমি আপনাদের গাজর খাওয়ার কিছু নিয়ম সম্পর্ক জানাবো।
আপনারা গাজর খাবার আগে পানিতে ১৫ মিনিটের জন্য ভিজিয়ে রাখবেন এবং আবার পরবর্তীতে ভালোভাবে ধুয়ে সালাত অথবা কাঁচা চিবিয়ে খাবেন। এখনকার সকল ফল এবং শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণ ফরমালিন থাকার কারণে উপকারের বদলে ক্ষতি বেশি হয়।
আপনারা যখন কাঁচা গাজর সালাদ অথবা কাঁচা চিবিয়ে খাবেন তখন অবশ্যই গাজরের গায়ের খোসা গুলো ছাড়িয়ে নেবেন কারণ ওপরের অংশে ফরমালিনের পরিমাণ বেশি থাকায় ক্ষতির সম্ভাবনা থাকতে পারে।
আপনারা গাজর যদি রান্না করে খেতে চান তাহলে অবশ্যই ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে তারপর রান্না করবে এবং গাজর রান্নার সময় অতিরিক্ত সিদ্ধ করবেন না এতে গাজরের গুণগতমান নষ্ট হয়ে যায়।
আপনারা গাজর দিয়ে সুস্বাদু হালুয়া বানিয়ে খেতে পারেন এতে খেতেও ভালো লাগে এবং শরীরের জন্য উপকার ও হয়।
গাজর রান্না করার পর বা গাজরের সবজি বানানোর পর অতিরিক্ত গরম খাবেন না এতে গ্যাসের সমস্যা বেশি হতে পারে গ্যাসের কারণে বুকে জ্বালাপোড়া হতে পারে ও বমি বমি ভাব ও হয় অনেক সময়।
গাজর খেলে কি ত্বক ফর্সা হয়
আমরা সবাই গাজর কমবেশি খেয়ে থাকি কিন্তু অনেকে জানে না যে আমরা গাজর কেন খাচ্ছি গাজর খেলে আমাদের কি উপকার হয়। গাজর আমাদের ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে গাজর খেলে ত্বক ভেতর থেকে ভালো থাকে আর ত্বকের ওপরে ব্যবহার করলে ত্বকের ওপর ভালো থাকে।
আপনারা যদি প্রতিদিন দিনে দুই থেকে তিনটা করে গাজর চিবিয়ে খান তাহলে আপনাদের টক হবে ফর্সা ও টান টান কাঁচের মতো। গাজর ত্বকের ভেতরের টিস্যুকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে। সূর্যের ক্ষতিকর রশি থেকে ত্বক বাঁচাতে বা রক্ষা করতে সাহায্য করে। তাছাড়া গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটি তাই এই ক্যারোটিন আমাদের শরীরের ভিতরে প্রবেশ করে ভিটামিন এ তে পরিণত করে। আর ভিটামিন এ আমাদের ত্বকের জন্য কতটা উপকারিতা আমাদের সবারই কম বেশি জানা আছে। গাজর খেলে আমাদের ত্বক ভেতর থেকে ফর্সা হতে থাকে। তাই আমাদের প্রতিদিন ২ থেকে তিনটা গাজর খাওয়া প্রয়োজন।
স্বাস্থ্যতথ্যঃ
* গাজরের বিটা ক্যারোটিন ভিটামিন-'এ'-তে রূপান্তরিত হয়ে দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। এটি অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট হিসেবেও কাজ করে।
* গবেষণায় দেখা গেছে, গাজরে বিদ্যমান ফ্যালক্যারিনল ও ফ্যালক্যারিডিওল ফুসফুস ও অন্ত্রের ক্যান্সারসহ অন্যান্য ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
* গাজরের আলফা ক্যারোটিন ও লুটিন নামক উপাদান হৃদরোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
* গাজর থেকে প্রাপ্ত ভিটামিন-'এ' রক্তের ক্ষতিকর টঙ্কি উপাদানগুলো দেহ থেকে বের করে দিতে সাহায্য করে।
* গাজর শ্বাসনালির প্রদাহ নিরাময় করে।
* গাজর দাঁত ও মাড়ির সুস্থতা রক্ষা করে।
* গর্ভবতী মায়েরা গাজরের রস খেলে শিশুর জন্ডিস হওয়ার ঝুঁকি কমে।
* এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
* গাজর শরীরের যেকোনো ক্ষত নিরাময় করে। গাজরের পাতা মধুর সঙ্গে মিলিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
* গাজরের স্যুপ ডায়রিয়া রোগে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
* গাজর কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে।
* গাজরের সঙ্গে কয়েক কোয়া রসুন মিশিয়ে খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
সৌন্দর্য রক্ষায় গাজরঃ
* গবেষণায় পাওয়া গেছে, গাজরে ক্যারোটিনয়েড রঞ্জক পদার্থ রয়েছে। এ উপাদানটি ত্বকের কোষ পরিষ্কার করে ত্বককে করে তোলে আকর্ষণীয়।
* ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর করতে গাজর কার্যকরী।
* গাজর চুল, ত্বক ও নখের সৌন্দর্য রক্ষা করে।
* এটি ত্বকের ভাঁজ, খসখসে ভাব ও ব্রণ দূর করে।
* গাজরের সঙ্গে মধু মিশিয়ে ত্বকের প্রলেপ হিসেবে ব্যবহার করলে ত্বক উজ্জ্বল হয়।
সেক্সে গাজরের উপকারিতা
সেক্সে গাজরের উপকারিতা অনেক। শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি করে: গাজরে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ই এবং বিটা-ক্যারোটিন। এগুলো শুক্রাণু তৈরি করতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব পুরুষরা নিয়মিত গাজর খায় তাদের দেহে বেশি শুক্রাণু তৈরি হয়। টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধি করে: গাজরে থাকে ভিটামিন এ আর ভিটামিন এ লিভার এর ফাংশনেও অবদান রাখে।
অধিকাংশ পুরুষের মধ্যে একটা সমস্যা বেশ প্রকট হয়ে উঠছে। দিন যত যাচ্ছে পুরুষের মধ্যে নপুংসকতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষের যৌন ইচ্ছা যাচ্ছে ক্রমশ কমে। কাজেই যৌন চাহিদা কমে যাওয়ার আগে থেকে সচেতন হওয়া প্রয়োজন৷ জেনে নিতে পারেন কী করে এই চাহিদা ক্রমশ ক্ষয়মান হচ্ছে৷হোম রেমেডি পুরুষের এই সমস্যা সমাধানের জন্য এগিয়ে এসেছে৷
তারা যাতে আবার তাদের পূর্ণ যৌন ইচ্ছা ফিরে পায় তার উপায় বার করেছে হোম রেমেডি৷ যাদের মধ্যে এই অসুবিধা সবেমাত্র দেখা দিয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে হোম রেমেডি কার্যকরী হতে পারে৷ কিছু কিছু ক্ষেত্রে হোম রেমেডি দ্বারা চিকিৎসা করা যায় কিন্তু সবক্ষেত্রে হোম রেমেডি প্রযোজ্য নয়৷এবার আসুন জানা যাক যৌন অক্ষমতার প্রথম ধাপের চিকিৎসাতে দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার্য কি কি সামগ্রী কাজে লাগতে পারে বা তা ব্যবহারে কি উপকার হয়-
দেড়শো গ্রাম গাজর কুঁচি এক টেবিল চামচ মধু এবং হাফ-বয়েল ডিমের সঙ্গে মিশিয়ে দুমাস খেলে আপনার শারীরিক এই অক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে।
গাজর মুখে মাখলে কি হয়
গাজরের ভিটামিন সম্পর্কে আমাদের সবারই মোটামুটি জানা রয়েছে। গাজর আমাদের ত্বকের জন্য যে কতটা উপকারী যারা ত্বকে ব্যবহার করেছে তারাই জানে। গাজর আমাদের ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ত্বকের ভেতরের রক্ত চলাচল বাড়িয়ে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। আমাদের অনেকের ত্বকে বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা দেয় যেমন, ব্রণ, চোখের নিচের কালো দাগ,ত্বকের এক অংশ কালো আরেক অংশ সাদা, ত্বক কালো হয়ে যাওয়া, ত্বক খসখসে হয়ে যাওয়া ইত্যাদি আরো অনেক সমস্যা দূর করতে গাজরের জুরি মেলা ভার। তাই আপনারা গাজরের বিভিন্ন প্যাক অথবা সাবান বাড়িতে প্রাকৃতিক উপায়ে বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনাদের ত্বক অনেক ভালো থাকবে ।
গাজর আপনারা কিভাবে মুখে মাখতে পারেন তা জেনে নিনঃ
গাজোল দিয়ে প্যাক বানানো নিয়মঃ একটি গাজর গ্রেট করে নিয়ে অথবা ব্লেন্ডার করে রস করে নিন এরপর একটি পরিষ্কার পাত্রে গাজরের চার চামচ রস নিয়ে তার সঙ্গে হাফ চামচ মধু দুই চামচ কনফ্লাওয়ার এবং এক চামচ এলোভেরা জেল ভালোভাবে মিশিয়ে দশ মিনিট রেখে দিন দশ মিনিট পর প্যাকটি আপনারা ত্বকে ভালোভাবে আলতো হাতে মাসাজ করে লাগিয়ে নিন।
এবং তিরিশ মিনিটের জন্য লাগিয়ে রাখুন ত্বকে লাগানো অবস্থায় কোন কথা বলবেন না, কারণ চামড়া কুচকে যেতে পারে তারপর ভালোভাবে হালকা হাতে ঘষে ঘষে ত্বক ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে আপনারা সপ্তাহে দুইদিন ব্যবহার করলে এর ফলাফল বুঝতে পারবেন যাদের অনেক পুরাতন মেছতার দাগ রয়েছে তাদেরও মেজটা ভালো হয়ে যাবে। কিন্তু নিয়ম অনুসারে এই প্যাকটি কমপক্ষে একমাস ব্যবহার করতে হবে। তাহলে ভালো ফলাফল পাবেন আশা করি ইনশাল্লাহ।
গাজরের সাবান বানানোর নিয়মঃ দুইটা গাজর ভালোভাবে ব্লেন্ডার করে নিতে হবে। এরপর একটি সুতির নেকরা দিয়ে ভালোভাবে ছেকে রস বের করে নিতে হবে। এরপর কস্কো অথবা পাপায়া সাবানের অর্ধেক ছোট টুকরা করে কেটে নিবেন। এরপর একটি পাতিলে তিন কাপ পানি ভালোভাবে ফুটাতে দিন এরপর একটি ছোট বাটিতে করে সাবানের টুকরোগুলো গরম পানির মধ্যে বসিয়ে একটি চামচের সাহায্যে নাড়তে থাকুন। যতক্ষণ পর্যন্ত সাবানের টুকরোগুলো গলে না যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত নাড়তে থাকুন ,সাবানের টুকরো গুলো গলে গেলে নামিয়ে তার মধ্যে গাজরের রস দুইটা ভিটামিন ই ক্যাপসুল এবং এক চামচ অলিভ অয়েল তেল দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিবেন। যেই পাত্রে সাবান বসাবেন তার নিচে হালকা অলিভ অয়েল তেল দিয়ে দিবেন। তাহলে সাবান উঠানোর সময় কোন সমস্যা হবে না।
শীতে কেন গাজর খাবেন-কারণ জানালেন পুষ্টিবিদ
গাজর এমন একটি সবজি যা আট থেকে আশি সবার পছন্দের। প্রায় বছরজুড়ে বাজারে পাওয়া গেলেও শীতকালীন সবজি হওয়ায় এ সময় কম দামে মিলে। সবজি হিসেবে তরকারিতে, সালাদ করে, বিভিন্ন ডেজার্ট কিংবা কাঁচা চিবিয়েও খাওয়া হয় গাজরকে।
গাজর অত্যন্ত পুষ্টিকর, সুস্বাদু এবং খাদ্যআঁশসমৃদ্ধ শীতকালীন সবজি, যা প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায়। তরকারি ও সালাদ হিসেবে গাজর খাওয়া যায়। এ ছাড়া গাজর দিয়ে অনেক সুস্বাদু খাবার তৈরি করা যায়। তবে রান্না করে খাওয়ার চেয়ে গাজর কাঁচা খাওয়া বেশি ভালো। কারণ এতে পুষ্টির অপচয় কম হয়।
পুষ্টিতথ্যঃ
১০০ গ্রাম (এক কাপ) পরিমাণ গাজর থেকে ৮২৮৫ মাইক্রোগ্রাম বিটাক্যারোটিন এবং ১৬৭০৬ ওট ভিটামিন 'এ' পাওয়া যায়। এ ছাড়া ৪১ কিলোক্যালোরি খাদ্যশক্তি, ২.৮ গ্রাম খাদ্যআঁশ, ভিটামিন 'বি-১' ০.০৪ মিলিগ্রাম, ভিটামিন 'বি-২' ০.০৫ মিলিগ্রাম; ২.২ মিলিগ্রাম লৌহ, ৫.৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন 'সি', ১৩.২ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন 'কে', ১৯ মাইক্রোগ্রাম ফলেট, ৩২০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ৩৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১২ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ১২ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়।
গাজরকে বলা হয় পুষ্টিকর সবজি। ভিটামিন, খনিজ ও অন্যান্য উপাদানে ভরপুর এটি। পুষ্টিগুণে ভরপুর হলেও এর উপকারিতা সম্পর্কে খুব একটা জানেন না মানুষ। সম্প্রতি দেশের একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে গাজরের পুষ্টি ও উপকারিতা নিয়ে কথা বলেছেন রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের খাদ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ফারজানা শারমিন তন্বী। এবার তাহলে এ সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
গাজরের উপকারিতা: ভিটামিন-এ এর উৎস বলা যেতে পারে গাজরকে। নিয়মিত গাজর খাওয়ার ফলে এতে বিদ্যমান ভিটামিন এ ত্বকের কোষের বৃদ্ধি ও পুনর্জন্মে সহায়তা করে। ত্বকের বলিরেখা, ব্রন, দাগছোপ দূর করা এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে কাজ করে। বিটা ক্যারোটিন থাকায় গাজর খাওয়ার ফলে শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তর হয়। যা চোখের রেটিনায় অবস্থিত রড ও কোন কোষের জন্য উপকারী। দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি, রাতে চোখে কম দেখার সমস্যা প্রতিরোধ ও ছানি পড়ার ঝুঁকি রোধে সহায়তা করে।
শীতে স্বাভাবিকভাবে ত্বক দ্রুত শুষ্ক হয়ে যায়। এ সময় গাজর খেলে ত্বকে পটাশিয়ামের ঘাটতি দূর হয় এবং আর্দ্রতা বজায় থাকে। ভিটামিন-সি, ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় নিয়মিত গাজর খাওয়ার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। এতে থাকা ভিটামিন ও মিনারেল চুল পড়া রোধে সহযোগিতা করে।
দাঁতের সমস্যা থাকলেও গাজর খাওয়া যেতে পারে। দাঁতের সুরক্ষায় খুবই উপকারী এই সবজি। এটি আপনার দাঁত পরিষ্কারক হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি দাঁতের গোড়ায় ক্যালকুলাস জমতে বাধা দেয়। আবার অন্তঃসত্ত্বা মা ও শিশুর জন্য আদর্শ সবজি। গাজরের রস শিশুর জন্ডিস হওয়ার ঝুঁকি কমায়। গাজরে থাকা ফাইবার ও পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেও কার্যকর। এতে থাকা ভিটামিন-এ লিভারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি, লিভার থেকে টক্সিন দূর ও লিভারকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এছাড়া ক্যানসারের ঝুঁকিও কমায় গাজর।
গাজর খাওয়ার উপায়: কাঁচা খেলে ভালোভাবে ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে খাওয়া উচিত। সবজি হিসেবে খেলে বেশি সময় নিয়ে রান্না করা যাবে না। আবার গাজরের তৈরি খাবার ঠান্ডা হলে খাওয়া ঠিক নয়।
সতর্কতা: গাজর খেতে সুস্বাদু হলেও অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ হওয়ায় বেশি পরিমাণে খাওয়া হলে শরীরে ভিটামিন-এ এর পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। আবার গাজর খাওয়ার পর সূর্যের আলোয় গেলে ত্বক হলুদ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যদিও এটি সাময়িক সমস্যা। তবে গাজরে যাদের সমস্যা রয়েছে, তাদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া গাজর খাওয়া ঠিক নয়।
গাজরের শাক খাওয়া ভালো নাকি খারাপ
শীত মানেই গাজরের সমারোহ। এসময় নানাবিধ উপকারিতার জন্য সবাই গাজর খান। তবে অনেকেই জানেন না, গাজরের পাতা বা শাকও খাওয়া যায়। এর পাতা উপকারিতায় ভরপুর।
জানা যায়, একটু কটু গন্ধের জন্য আগে এ শাক খাওয়া হতো না। মনে করা হতো এ শাক বিষাক্ত। কিন্তু সেই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। বরং এ শাকের গুণাগুণ কোনোভাবেই উপেক্ষা করা ঠিক নয়।
রস, তরকারি বা চাটনি হিসেবে গাজরের শাক খুবই সুস্বাদু। কিন্তু এ শাক অনেকেই পছন্দ করেন না। এর গুণাগুণ জানলে হয়তো বুঝতে পারবেন কত উপকারিতা হারাচ্ছেন তারা।
গাজর শাকের গুণাগুণঃ
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবারে ভরপুর গাজর শাক। যা সংক্রামক ব্যাধি থেকে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে। ফলে সহজেই সুস্থ জীবন পাওয়া যায়। এ শাকে ডায়েটরি ফাইবারও অনেক বেশি। তাই মেটাবলিজম ও পরিপাক ক্রিয়াকে সুস্থ রাখে।
গাজর শাকের উপকারিতাঃ
- রক্তাল্পতা সমস্যায় গাজর শাক খুবই উপকারী
- রক্তে কোলেস্টরেল মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এ শাক
- হৃদরোগের সমস্যায়ও গাজর শাক উপকারী
- রক্ত পরিশোধন করে কিডনি সুস্থ রাখে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় গাজর শাক
- ক্যানসারের ঝুঁকিও দূর করে এ শাক।
ব্লাড সুগারে কি গাজর খাওয়া যায়?
অনেকেই আছে যারা জানেন না যে, ব্লাড সুগারে কি গাজর খাওয়া যায় কিনা ? এই পোষ্টটি সম্পূর্ন পড়ুন তাহলে বুঝতে পারবেন ব্লাড সুগারে কি গাজর খাওয়া যায় কিনা ? শীতকালীন সবজির বাজার মানেই গাজর। লাল এবং কমলা-এই দুই রকমের গাজর প্রচুর পাওয়া যায় এই সময়। গাজরের মিষ্টি স্বাদের জন্য আমরা অনেকেই মনে করি ডায়াবেটিসে হয়তো এই সবজি খাওয়া যায় না। পুষ্টিবিদ ভিক্টোরিয়া হুইটিংটন জানাচ্ছেন, গাজর যেকোনও ব্যালান্সড ডায়েটে রাখতে পারেন। এমনকী, ব্লাড সুগারের রোগীরাও নিশ্চিন্তে খেতে পারেন এই সবজি। গাজরে প্রচুর ফাইবার, ভিটামিন ও অন্যান্য গুণ আছে। এই সবজির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুব কম।
সাধারণত এর জিআই ইনডেক্স ১৬ থেকে ৪১। তবে ডায়াবেটিকরা কাঁচা গাজর বেশি খান। কাঁচা গাজরে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স সবথেকে কম। রান্না করলে জিআই ইনডেক্স বেড়ে যাবে গাজরের। সবথেকে বেশি জিআই হল সিদ্ধ করা গাজরে। এর থেকে কিছুটা কম লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স হবে ভাপা গাজরে। গাজরের ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে দেয় না। তবে তাই বলে অতিরিক্ত গাজর খাবেন না। তাহলে কিন্তু হিতে বিপরীত হতে পারে। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে পরিমিত পরিমাণে গাজর খান ব্লাড সুগার রোগীরা। গাজরের বিটা ক্যারোটিন অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট গ্লুকোজ মেটাবলিজম নিয়ন্ত্রণ করে। গবেষণায় প্রকাশ, ভিটামিন এ-এর অভাব হলেও ব্লাড সুগারের মাত্রা বাড়তে পারে। তাই টাইপ টু ডায়াবেটিসে উপকারী গাজর। নন স্টার্চি সবজি গাজর খেলে দীর্ঘ ক্ষণ পেট পূর্ণ থাকে। ক্যালরিও বাড়ে না। তাই ব্লাড সুগারের ডায়েটে গাজর অবশ্যই রাখুন। দৈনিক ৫০ গ্রাম কাঁচা গাজর মধুমেহ রোগীরা খেতেই পারেন।
তারুণ্য ধরে রাখতে গাজরের রস
গাজর অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি সবজি। গাজর দেখতে যেমন সুন্দর ও আকর্ষণীয় তেমনি খেতেও সুস্বাদু। তদুপরি পুষ্টিতেও ভরপুর। এত সুন্দর ও দৃষ্টিনন্দন হওয়ার বড় কারণ এর মধ্যে বিদ্যমান বিটা-ক্যারোটিন। গাজর নিজে যেমন সুন্দর তেমনি মানুষের রঙ উজ্জ্বল করতেও এটি সহায়ক। চলুন দেখে নেয়া যাক গাজরের উপকারিতা-
১. চোখের মহৌষধ: গাজরের আকর্ষণীয় বর্ণের মধ্যেই রয়েছে এর ঔষধি গুণ। গাজরের বিটা ক্যারোটিন নিজে নিজেই ভিটামিন-এ’তে রূপান্তরিত হয় যা দেহের জন্য খুবই উপকারী। বিটা-ক্যারোটিন আমাদের দেহের ভেতরে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে রেটিনল বা ভিটামিন-এ’তে রূপান্তরিত হয়, আর ভিটামিন-এ আমাদের দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
২. হজমশক্তি বৃদ্ধি করে: গাজরের রস লিভারের কার্যকারিতা বাড়ায়। ফলে হজম শক্তির উন্নতি হয়।
৩. হাড়ের রোগ প্রতিরোধে সহায়ক: রোগ প্রতিরোধ গাজরের অস্টিওপরোসিস, আথ্রাইটিস ও বিভিন্ন রস হিতকর।
৪. ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক: গাজরে রয়েছে ভিটামিন-ই, যা ক্যান্সার প্রতিরোধী। তাই গাজর ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক। গাজরে বিদ্যমান বিটা-ক্যারোটিন আমাদের ত্বককে সূর্যের অতি বেগুণি রশ্মির হাত থেকে সুরক্ষা করে এমনকি ক্যান্সার থেকেও রক্ষা করে।
৫. তারুণ্য ধরে রাখতে: বয়সের ছাপ কমাতে ও তারুণ্য ধরে রাখতে গাজরের রস সাহায্য করে। গাজর বিটা- ক্যারোটিন সমৃদ্ধ, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং কোষের ক্ষয় রোধে সহায়ক। ফলে ধরে রাখতে সাাহায্য করে।
৬. ওজন কমায়: গাজরে ক্যালোরির পরিমাণ যৎসামান্য, যা ওজন কমাতে বেশ সহায়ক।
৭. কোলস্টেরল কমায়: গাজরে পটাসিয়াম বিদ্যমান, যা কোলস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
৮. মেদ কমায়: গাজরের রস শরীরের অপ্রয়োজনীয় মেদ কমাতে কমাতে সাহায্য করে।
৯. ত্বকের লাবণ্য বাড়ায়: গাজরের রস ত্বকের লাবণ্য ও উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং ত্বককে সুরক্ষা করে।
১০. ব্যথা ও জ্বালাপোড়া কমায়: বয়সজনিত যে কোনো ব্যথা-বেদনা ও শরীরের জ্বালাপোড়া কমাতে গাজরের রস বিশেষভাবে সাহায্য করে।
শেষ কথাঃ গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতা-শীতে কেন গাজর খাবেন
উপরের আলোতে খুব ভালোভাবে গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতা-শীতে কেন গাজর খাবেন এই বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আমার পোষ্টের মাধ্যমে গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতা-শীতে কেন গাজর খাবেন এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এই ওয়েবসাইটের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই, এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতা গাজর খেলে কি ত্বক ফর্সা হয় এরকম আরো অনেক নতুন নতুন আর্টিকেল দেখতে চাইলে এই ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন। আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং এই ওয়েবসাইটের আর্টিকেল পড়ার সুযোগ করে দিন।
কৃষ্ণ কম্পিউটারস’র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url